শ্যামনগর উপজেলায় যাদবপুর গ্রামে কামরুলের জন্ম ছোটবেলা থেকেই দুরন্তপনা মানবিক সেবা সহ মানুষের পাশে যাওয়া তার নেশা। জীবন যুদ্ধে হাটি হাটি পা পা করে ইত্যাদির অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে নিজেই একজন মানবিক যোদ্ধা হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। ২০০৬ সাল থেকেই সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কখনো নদী ভাঙ্গনে বাঁধ বাঁধার জন্য স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের নিয়ে ছুটে গিয়েছেন , ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করা।কখনো ঝড় জলোচ্ছ্বাস ঘূর্ণিঝড়ের কপাল থেকে শিশুদের রক্ষা করতে সাঁতার শেখানো। সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় নিজের উদ্যোগে কেউ পাশে না দাঁড়ালেও সমাজের দায়বদ্ধতা থেকেই কামরুল বেছে নিয়েছেন মানুষের মানবিক সেবা করা। উপকূলের ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত শ্যামনগর জনপদে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকা মানুষের পাশে দাঁড়ানো তার মানবিক যোদ্ধা হিসেবে ঘুম কেড়ে নিয়েছে। দিনের গল্প এখানে শেষ নয় সামাজিক বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশুশ্রম, মাদক প্রতিরোধ ক্যাম্পে ক্যাম্পেইন সহ সকল সামাজিক কাজের কামরুল ছুটে যান সেই এলাকায় মানুষের পাশে। এমনকি রাস্তার পাশে বজ্রনিরোধক তালের চারা রোপন করেছেন প্রায় ১০ কিলোমিটার। দিন কেটে যায় এমনি ভাবে, তবুও মন থেকে মুছে না ঠিক তিনটায় উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীতে বইও পত্রিকা পড়ার নেশা সেখানেই ছুটে আসেন পড়ার জন্য প্রায় চার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে । নিজের পরিশ্রমের যতটুকু উপার্জন ততটুকুই যেন সমাজের মানুষের উপকারে কাজে লাগে সেজন্যই ছুটে চলেছেন পথে প্রান্তে।
তার গল্প শুনে শুনতে গিয়ে
তার প্রিয় বন্ধু সৌমিত্র কুমার মন্ডল সবুজ পরিচ্ছন্ন মনের বন্ধু হিসেবে উপস্থাপন করেন । নিজের মুখে জীবনের গল্প তুলে ধরলেন।
এক দিন হঠাৎ সন্ধ্যাবেলা আমি ওদের বাড়ি যাই হঠাৎ দেখতে পেলাম ওদের বাড়ি একটি সাদা কালো টিভিতে হানিফ সংকেত এর ইত্যাদি অনুষ্ঠান হচ্ছে তখন একটু মনোযোগ দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। ধারাবাহিকভাবে দেখতে দেখতে অনুষ্ঠানে একাংশে দেখতে পেলাম কিছু যুবকরা সাদা টি-শার্ট পরা গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সহ অবহেলিত মানুষের সেবা মূলক কাজ করে দিচ্ছেন স্বেচ্ছায়।তখন আমার মধ্যে একটা অনুভূতি কাজ করলো।আমিও তো পারি আমরাও পারি
তখন আমি আমার সহপাঠী ও যুবদের সাথে
এমন ভাবে শেয়ার করি,তাদেরকে আগ্রহ করতে
কিন্তু বিষয়টি তখন সেভাবে কেউ মাথায় নেয়নি
তবুও আমি নিজে নিজে ছোট ছোট কাজ
ন্যায় পরায়ণে ব্যবহারিত ক্যালেন্ডারের অফার পিঠের সাদা অংশ ব্যানার হিসেবে ব্যবহার করি মার্কার কলম কালি দিয়ে লিখে কাজ করা শুরু করলাম।
সেখান থেকে কোথাও রাস্তায় ভেঙে যাওয়া পুডিং করা ,কৃষকের ধানি জমিতে জলবদ্ধতা ,
খালের নেট পাটা নিরশন
লবণ পানি ফসলের জমিতে ক্ষতি করে সে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের কর সচেতন করি।
রাস্তার পাশ দিয়ে তালের রোপন,খেজুরের বীজপণ এসকল নানা উন্নয়নমুখী কাজ করতে থাকি। ঢাকা ব্রিটিশ কাউন্সিল সহ কিছু সরকারি বেসরকারি সংস্থার সাথে পরিচিত হয়। তাদের এই শিক্ষা দীক্ষায় আমার প্রেরণা যোগায় । কখনো কখনো সরকারি বেসরকারি এনজিও প্রোগ্রাম থেকে
সম্মানির টাকা দিয়ে খরচ করতে শুরু করি এবং মাঝে মাঝে নিজের চায়ের বিল বাঁচিয়ে ইচ্ছা শক্তি দিয়ে এলাকার বিভিন্ন দারিদ্র মানুষের সহযোগিতা করি।
সরকারি বেসরকারি তহবিল থেকে সেবা পাওয়ার যোগাযোগ করে দেই।
টয়লেট ও গৃহ নির্মাণ ,নলকূপ স্থাপন মসজিদ এবং মন্দির ওজুখানা তৈরি নলকূপ টয়লেট সহ স্থাপনায় সহযোগিতা করি। স্কুল ছাত্র/ ছাত্রী ও গ্রামবাসীদের খাল পারাপারের বাঁশর সাঁকো তৈরি সহ নানা প্রকার কাজ করতে শুরু করি।এমনকি যুবদের সাথে সমাজমুখী উন্নয়নের গল্প করি। রাস্তায় কলার খোসা না ফেলা, কারো সাথে ঝগড়া না করা, মাদক সেবন না করা
এলাকায় বাল্যবিবাহ না হওয়া এবং স্কুল ছাত্র শিশু এবং যুবক ঝরে যায়,তাদেরকে বলে বোঝানো স্কুলে পাঠানো তাদের গার্জেনের সাথে কথা বলা ও সরকারি বেসরকারি সংস্থা থেকে শিক্ষা মুলক ট্রেনিং পাওয়া যোগাযোগ করে দিই।
যুবকদের বিনোদন ফুটবল খেলা, গাদন খেলা ভ্রমণে যাওয়া বিভিন্নভাবে তাদের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা প্রবেশ করানো এমনিভাবে ধর্মীয় রীতিনীতি গুলো পালন করে থাকি হঠাৎ করে উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সংকট হয়ে যায়।।আমার গ্রাম সহ আরো অনেক গ্রাম মিলে
পিএসএফ অকেজো হয়ে পড়লে এলাকাবাসীর উদ্যোগে তা মেরামত করার ব্যবস্থা করি। কিছু যুবদের সাথে একত্রিত করে তাদের প্রেরণা জাগায় এবং গ্রামীন নারীদের ১০০ ও ১০০পুরুষদের স্বাস্থ্য বিষয় সচেতন করে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। নিজেরদের দায়িত্বে এভাবে ১০-১১ গ্রামের মানুষের খাওয়ার পানি নিশ্চিত করে থাকি দূষণমুক্ত খাবার পানি
এমনিভাবে হঠাৎ করে ২০০৯ সালে ২৫শে মে উপকূল অঞ্চলে আইলার আঘাতে অনেক মানুষ বিপর্যয় পড়ে সেখানে নিজে সহ আরো যুবকদের নিয়ে সেবার চেষ্টা করি, আস্তে আস্তে সমাজসেবা ও মানব কল্যাণের কাজের দিকে কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কীয়করণ ,ও বিভিন্ন মহামারী, নদী ভাঙ্গন বাঁধ নির্মাণ ,
বানভাসী বিপন্নিতো মানুষের পাশে দাঁড়ানো ,
রাস্তার পাশ দিয়ে বৃক্ষরোপণ ,তালের বীজ রোপণ শিশুশ্রম প্রতিরোধ ,মাদক প্রতিরোধ ক্যাম্পেইন সাঁতার না জানা শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ,
শিশুদের নিয়ে সুস্বাস্থ্য ও জ্ঞান চর্চার আসর
নদীতে বজ্র প্লাস্টিক না ফেলি বাঁচাও দেশ বাঁচাও ক্যাম্পেইন
এভাবে কাজ করতে করতে উৎসাহিত হই । এক বছরে কর্মপরিকল্পনা করে থাকি উন্নয়নমূলক কি কি কাজ করতে পারি ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূল জনপদে মানবিক যোদ্ধা হিসেবে শেখ কামরুল জামান এর স্বেচ্ছাসেবায় শ্যামনগর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে মানবিক যোদ্ধা।
Leave a Reply